আমার সম্পর্কে

আমার ফটো
House: 14, Road: 15, Rupnagar R/A, Mirpur, Dhaka - 1216, Dhaka-1216, Bangladesh
আমাদের লক্ষ্য হলো প্রযুক্তিকে সুক্ষভাবে সংযুক্ত করে আরাম, সুরক্ষা এবং বিনোদনের মাধ্যমে আপনার জীবনযাত্রাকে উন্নত করা।

স্মার্ট হোম যেভাবে কাজ করে

একটি সাধারণ লাইট সুইচ যেভাবে কাজ করে তা খুবই সহজ ৷ শুধু সুইচ অন করলে বিদ্যুৎ প্রবাহ ঘটে এবং লাইট জ্বলে আর সুইচ অফ করলে বিদ্যুৎ প্রবাহ বন্ধ হয় এবং লাইট অফ হয়, কিন্তু স্মার্টহোমে এই ব্যাপারটি কিছুটা ভিন্নভাবে ঘটে ৷ এখানে সুইচের মাধ্যমে বিদ্যুৎ প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের পরিবর্তে একটি সিগন্যাল পাঠানো হয় কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কে, একে বাস সিস্টেমও বলা হয়ে থাকে ৷ কন্ট্রোলার সার্কিট নামের একটি সার্কিট এক বা একাধিক লাইটের সাথে যুক্ত থাকে ৷ সুইচের কাছ থেকে বাস সিস্টেমের মাধ্যমে সিগন্যাল পাবার সাথে সাথে তা সাড়া দেয়, ফলে লাইট অন হয় ৷ কিন্তু কমিউনিকেশন নেটওয়ার্কে শুধু একটি লাইট যুক্ত থাকে না বরং একাধিক লাইটসহ অন্য আরো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসও যুক্ত থাকে ৷ ফলে সুইচ অন করে একাধিক ডিভাইস একই সাথে অন করা সম্ভব ৷ স্মার্ট হোমের পুরো বাস সিস্টেমে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ এত সহজ নয়, বেশ জটিল ৷ স্মার্ট হোমের মূল নেটওয়ার্কটিকে কয়েকটি সিস্টেমে ভাগ করা হয় ৷ সেখানে প্রতিটি সিস্টেম একটি সিগন্যালকে ব্যাখ্যা করার জন্য নিজেদের মধ্যে রিসোর্স এবং ইনফরমেশন শেয়ার করে থাকে ৷


তথ্য প্রবাহের প্রযুক্তি--- স্মার্ট হোম প্রযুক্তির একটি বড় অংশ নির্ভর করে বাসার প্রতিটি জায়গায় তথ্য এবং সিগন্যাল পরিচালনা করার ওপর; আর এজন্য কয়েকটি প্রযুক্তি রয়েছে  যেমন- 

ডেডিকেটেড ওয়্যারিং বাস: এখানে ইনফরমেশন ডিস্ট্রিবিউট করার জন্য ওয়্যারিং বাস ব্যবহার করা হয়, আর এটি তৈরি করা হয় আনশিল্ডেড টুইস্টেড পেয়ার (ইউটিপি) ক্যাবল দিয়ে ৷ স্মার্ট হোমে ক্যাটাগরি ফাইভ (Cat 5) নেটওয়ার্কিং ক্যাবল দিয়ে নেটওয়ার্ক তৈরি করা হয়, যা আধুনিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরি করার কাজে ব্যবহার হচ্ছে ৷ এতে সিগন্যাল পাঠানোর জন্য চার জোড়া তার ব্যবহার করা হয় ৷

পাওয়ার লাইন কমিউনিকেশন: একটি সাধারণ ঘরে যে পাওয়ার লাইন আছে, তা ব্যবহার করে এক্ষেত্রে দুশ চল্লিশ ভোল্ট বিদ্যুৎ প্রবারে পাশাপাশি সিগন্যালও পাঠানো হয়ে থাকে ৷ হোম নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে একে একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে ধরা হয়, কারণ এর ফলে একটি ঘরে নতুন করে খুব একটা নেটওয়ার্কিং ক্যাবল বসাতে হয় না ৷ কিন্তু এর সমস্যা হলো, এর ব্যান্ডউইডথ বেশ কম ৷ কোনো ডিভাইস অন বা অফ করার জন্য ব্যবহৃত সিগন্যাল পাওয়ার ক্যাবলের মাধ্যমে প্রবাহিত হলেও ভিডিও ট্রান্সমিশনের মতো জটিল সিগন্যাল এর মাধ্যমে পাঠানো যায় না ৷

ইনফ্রারেড কমিউনিকেশন: ইনফ্রারেড ট্রান্সমিটার এবং রিসিভার এখন অনেক ঘরেই ব্যবহার হচ্ছে ৷ বিভিন্ন অডিও ভিজ্যুয়াল ইকুইপমেন্টে রিমোট কন্ট্রোলের ব্যবহার এর একটি উদাহরণ ৷ স্মার্ট হোমে ইনফ্রারেড রশ্মি ব্যবহার করে যোগাযোগ তৈরি করা এবং কমান্ড দেয়া যায়, তবে এক্ষেত্রে সমস্যা হলো ট্রান্সমিটার এবং রিসিভারের মধ্যে যোগাযোগের পথ হতে হবে বাধাহীন এবং সরলরৈখিক ৷

রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি কমিউনিকেশন: স্মার্ট হোমের ক্ষেত্রে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগের মাধ্যম হলো রেডিও সিগন্যাল ব্যবহার করা ৷ পিসি টু পিসি কমিউনিকেশনের জন্য যেসব নতুন নতুন স্ট্যান্ডার্ড তৈরি হচ্ছে সেগুলোই স্মার্ট হোমে ব্যবহার হচ্ছে ৷ এর একটি উদাহরণ হলো IEEE 802.11b স্ট্যান্ডার্ড, যা ওয়্যারলেস কম্পিউটার নেটওয়ার্ক তৈরির জন্য ব্যবহার হচ্ছে ৷ এছাড়াও আছে ব্লোটুথ, যা স্বল্প পরিসরে পিসি বিভিন্ন পেরিফেরাল, মোবাইল টেলিফোন ও অন্যান্য ডিভাইসের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার হয় ৷

স্মার্ট হোমের বিভিন্ন প্রটোকল--- স্মার্টহোমে তথ্য ও সিগন্যাল স্থানান্তরের মাধ্যমে বৈচিত্র্য আনার কারণে স্মার্ট হোম অপারেট করার জন্য বেশ কয়েক ধরনের কমিউনিকেশন প্রটোকলের উদ্ভব হয়েছে ৷ নিচে সেরকমই কয়েকটি প্রটোকলের কথা উল্লেখ করা হলো---

লোন ওয়ার্কস: এই প্রটোকলের উদ্ভাবক আমেরিকান ইচেলন কর্পোরেশন ৷ লোন ওয়ার্কস প্রটোকল তৈরি করা হয়েছিল কমার্শিয়াল বিল্ডিংয়ের নেটওয়ার্কিং করা এবং ইন্ডাস্ট্রিয়াল প্রসেস নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ৷ তথ্যপ্রবাহের যেকোনো মাধ্যমেই এটি দিয়ে কাজ করা যায়, তবে সাধারণত ডেডিকেটেড বাস বা পাওয়ারলাইন সিস্টেমে এ প্রটোকল ইনস্টল করা হয়ে থাকে ৷ বিভিন্ন ম্যানুফ্যাকচার কোম্পানি এই প্রটোকলের উপযোগী করে তাদের পণ্য তৈরি করেছ ৷

কোনেক্স: বিচ্ছিন্ন কিছু ইউরোপিয়ান স্ট্যান্ডার্ডের সমন্বয়ে এ প্রটোকলের উদ্ভব ৷ আর সেগুলো হলো ইউরোপিয়ান ইনস্টলেশন বাস অ্যাসোসিয়েশন (EIBA), বাটিবাস ক্লাব ইন্টারন্যাশনাল (BCI) এবং ইউরোপিয়ান হোম সিস্টেম অ্যাসোসিয়েশন (EHSA) ৷ প্রায় সব ধরনের মাধ্যমেই কোনেক্স সিস্টেম ব্যবহার করা যায় ৷

এক্স-টেন: ১৯৭৭ সালে আমেরিকায় এই প্রটোকল তৈরি করা হয়, পাওয়ারলাইনের ওপর কাজ করার উপযোগী এ প্রটোকল লোন ওয়ার্কস এবং কোনেক্স-এর তুলনায় সাশ্রয়ী ৷ তবে এক্স-টেন দিয়ে তৈরি নেটওয়ার্কে সর্বোচ্চ ২৫৬টি ডিভাইস যুক্ত করা যায় ৷ এক্স-টেন প্রটোকলের খুব বড় একটি সুবিধা হচ্ছে, এটি বাড়িতে ব্যবহার করা ইলেকট্রিক্যাল তারের সাথে যুক্ত করেই কাজ করা যায়, নতুন করে ওয়্যারিংয়ের কোনো প্রয়োজন নেই ৷ আমেরিকার বহু বাড়িতে হোম অটোমেশনের জন্য এক্স-টেন প্রটোকল ব্যবহার হয় ৷ এই প্রটোকলে কয়েক ধরনের কন্ট্রোল সিগন্যাল পাঠানো হয় ৷ যেমন- অন, অফ, লাইটের ক্ষেত্রে ব্রাইটনেস বাড়ানো ও কমানো ইত্যাদি ৷ এক্ষেত্রে প্রতিটি ডিভাইসের জন্য একটি অ্যাড্রেস ঠিক করা হয় এবং এভাবে মোট ২৫৬টি ডিভাইস ব্যবহার করা যায়, তবে যদি একই বাটন চাপ দিয়ে একাধিক ডিভাইস অন বা অফ করতে হয়, সেক্ষেত্রে সেই ডিভাইসগুলোকে একই অ্যাড্রেসে রাখতে হবে এবং এভাবে ২৫৬-এর বেশি ডিভাইস ব্যবহার করা সম্ভব হবে ৷ হোম অটোমেশনের জন্য এক্স-টেন বেশ জনপ্রিয় একটি প্রটোকল, বাজারে এক্স-টেন প্রটোকল কম্প্যাটিবল বিভিন্ন ডিভাইস কিনতে পাওয়া যায় ৷

1 টি মন্তব্য:

Thanks for reading!
Share this post with your friends and family.
Please post your valuable feedback in comment section.

Blogger দ্বারা পরিচালিত.